বাঙালি জাতির জন্য এক বিরাট ত্যাগ-তিতিক্ষা, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, আত্মােৎসর্গ ও সব। হারিয়ে মুক্ত আকাশ, বাতাস সমৃদ্ধ বাংলাদেশ লাভের মাস। এসময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র, নিরীহ বাঙালিদের। উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা নির্মম হত্যাকাণ্ড পরিচালিত করে পুরাে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যার মধ্যে অন্যতম। ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। পাক হানাদার বাহিনী নির্দিষ্ট কিছু কিছু স্থানে অনেকগুলাে লােককে ধরে নিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখত। ঐ স্থানকে বধ্যভূমি বলে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পূর্বক্ষণে (১৪ ডিসেম্বর) স্বাধীনতা যখন অনিবার্য হয়ে উঠে তখন পাকবাহিনী ও তাদের মিত্ররা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করে মােহাম্মদপুর।
বধ্যভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র বা আল-বদর সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পূর্বে । বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপকভাবে হত্যা করা হয়। শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নানান অত্যাচারের পর বাসে করে রায়ের বাজার (মােহাম্মদপুর), শিয়ালবাড়ি, মিরপুর প্রভৃতি বধ্যভূমি, কবরস্থান ও জল্লাদখানায় নিয়ে তাদের রক্তে রঞ্জিত করা হয়। ঢাকার বাইরে অন্যান্য শহরেও এরূপ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। মৃত্যুর পর অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায় নি। স্বাধীনতার পর। লাশের পর লাশের স্তুপ দেখা যায়। সেখানে অনেকের হাত-পা, চোখ বাঁধা ছিল। কারাে কান, নাক, হৃৎপিণ্ড ছিল না, মুখের। চেহারা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। এভাবেই বুদ্ধিজীবীদের রক্তগঙ্গা বইয়ে যায়। উল্লেখ্য, ১৪ ডিসেম্বর প্রতি বছর শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়। বাঙালিকে মেধাশূন্য করার পাকিস্তানি পরিকল্পনাকেই আল-বদর, আল-শামসরা নিষ্ঠুরভাবে বাস্তবায়ন করে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা
এ হত্যাকাণ্ডের হােতাদের মধ্যে অনেকের নাম শােনা যায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা। আজো নিরূপিত হয় নি। তাদের কোনাে পূর্ণাঙ্গ তালিকাও পাওয়া যায় নি। বাংলাদেশ’ নামক প্রামাণ্য গ্রন্থের পরিসংখ্যান। অনুযায়ী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা মােট ১,১০৯ জন। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার জন্য পাকিস্তানি হানাদাররা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের এমনি নির্মমভাবে হত্যা করে। বাংলাদেশে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তারা ছিল। দেশের মস্তিষ্ক, বিবেক ও শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের হত্যার ফলে দেশে শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অফিসিয়াল কাজকর্ম প্রভৃতি। সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা বেঁচে থাকলে দেশ ও জাতি আরাে সমৃদ্ধ হতাে। গণকবর সম্পর্কে টীকা লিখ। অথবা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গণকবর সম্পর্কে আলােচনা কর।
গণহত্যা বা জেনােসাইড একটি আতঙ্কজনক ও ঘৃণ্যতম শব্দ। গণহত্যার অর্থ হলাে জাতি। হত্যা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা পরিচালনা করে। গণহত্যার পর এসব লাশকে গণকবরে সমাহিত করা হয়। | গণকবর : পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড পরিচালিত করে ঢাকাসহ এক যােগে চট্টগ্রাম বিভাগ, খুলনা বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের সর্বত্র মিল্লা, বগুড়া, সৈয়দপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে। তাদের এই হত্যাকাণ্ড হতে। পরিত্রাণ পায় নি শিশু, বৃদ্ধ, বালক যুবক তরুণ নারী পুরুষ কেউই। সারাদেশে রাজাকার বাহিনী, আল-বদর, আল-শামস, । শান্তি কমিটির সদস্য এবং তথাকথিত ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগ পাকিস্তান বাহিনীর। সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা বাংলাদেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়। এরা মানুষ নামে কলঙ্ক।
গণহত্যার পর স্বয়ং হানাদার। বাহিনীরাই লাশ দাফন না করে গণকবর দিয়ে যায়। অনেক সময় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ লাশ পরিষ্কার করতে এবং লাশ শনাক্ত | করতে না পেরে গণকবর দেয়। একসঙ্গে অনেক লাশ গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখাকেই গণকবর বলা হয়। মূলত এদের লাশের। সংখ্যা বুঝতে না দেওয়া ও প্রমাণ লুকিয়ে ফেলার জন্য বাংলাদেশের বহু স্থানে অসংখ্য গণকবর দেওয়া হয়েছিল। আবার । অনেক সময় নদীতেও বহু লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। | উপসংহার । পিরশেষে বলা যায় যে, সমস্ত স্থানে একসাথে অনেক মৃতদেহ পুতে রাখা হয় সে সমস্ত স্থানকে গণকরব বলে।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা তা বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা তা বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে এ গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেলেও সংরক্ষণের। অভাবে অনেক গণকবর আজ বিলুপ্তপ্রায়।ঐতিহাসিক সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসমুদ্রের সম্মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাথানতা ঘােষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী গােপনে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে। জেনারেল ইয়াহিয়া খান হিয়া খান প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলােচনা করলেও গােপনে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি যা বিশ্ব বিবেককে এর বিরুদ্ধে সােচ্চার করে তােলে। র করে পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং বিচারের নামে প্রহসন শুরু নেন। ২৫ মার্চ রাতে পাক সেনাবাটি
আরো পড়ুন:
- জরুরি চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজের ইমার্জেন্সি ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
- শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে আলােচনার কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে বিস্তারিত ঘটনা আলোচনা করা হলো। অজানা নানান তথ্য জেনে নিন
- বাংলাদেশের স্বাধীন বাংলা বেতার অবদান ও কার্যকলাপ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো