পরিচালনায় ছিলেন এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেজর খালেদ মােশাররফ এবং সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এ. টি. এম.। হায়দার। এই সেক্টরটি গঙ্গাসাগর, আখাউড়া ও কসবা, মন্দভাব, শালদানদী, মতিনগর, নিলয়পুর এবং রাজনগর এই ছয়টি। সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ছয় হাজার এবং গণবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল। পয়ত্রিশ হাজার। এর সদর দপ্তর ভারতের ত্রিপুরা জেলার মেলাঘর গ্রামে ছিল। ৩ নং সেক্টর : আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে পূর্ব দিকে কুমিল্লা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে ৩ নং সেক্টর গঠিত।। এই সেক্টরে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ এবং সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এ.।
সিলেটের ডাইউকি বাহিনীর সদস্য সংখ্যা
এন. এম. নুরুজ্জামান। এই সেক্টরটি আশ্রমবাড়ি, সবাইছড়ি, হাতকাটা, সিমলা, পঞ্চবটি, মনতলা, বিজয়নগর, কলাছড়া, কলকলিয়া এবং বামুটি এই দশটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত। এই সেক্টরের অধীনে গণবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ত্রিশ হাজার। এর সদর দপ্তর ছিল ভারতের ত্রিপুরা জেলার কলাগাছিয়া গ্রাম।। ৪ নং সেক্টর : সিলেটের পূর্বাঞ্চল, খােয়াই, শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন থেকে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেটের ডাইউকি। সড়ক পর্যন্ত সীমানা নিয়ে ৪ নং সেক্টর গঠিত হয়েছিল। এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন প্রথমে মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত এবং পরে ক্যাপ্টেন এরব।
এ সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর চার হাজার এবং গণবাহিনীর নয় হাজার সদস্য যুদ্ধ করেছে। এই। সেক্টরটি জালালপুর, বড়পুঞ্জি, আমরাসিদ কুকিতল, কৈলাশ শহর এবং কমলপুর এই ছয়টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। এর । হেডকোয়ার্টার ছিল প্রথমে সিলেট জেলার করিমগঞ্জে এবং পরে তা স্থানান্তর করে সিলেট জেলারই মাসিমপুরে নেওয়া হয়।। ৫ নং সেক্টর : সিলেট জেলার দুর্গাপুর থেকে ডাউকি (তামাবিল) এবং এর পূর্বসীমা পর্যন্ত এলাকা নিয়ে গঠিত। হয়েছিল ৫ নং সেক্টর। এর কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী। এই সেক্টরটি মুক্তারপুর, ডাউকি, শেলা, ভােলাগঞ্জ বালাটি এবং বড়ছড়া এই ছয়টি সাব-সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালনা করা হয়েছিল। এর সদর দপ্তর সুনামগঞ্জ জেলার | ছাতক থানার বাশতলা গ্রামে অবস্থিত ছিল। ” ৬ নং সেক্টর : রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত হয়েছিল ৬ নং সেক্টর।
গণবাহিনীর নয় হাজার সদস্য
এই সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ছিলেন উইং কমান্ডার বাশার। এই সেক্টরটি ভজনপুর, পাটগ্রাম, সাহেবগঞ্জ, মােগলহাট ও চিলহাটি। এই পাঁচটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর প্রায় এগারাে হাজার সৈন্য যুদ্ধরত ছিল। এর সদর দপ্তর ছিল পাটগ্রামের কিট বুড়িমারীতে। ৭ নং সেক্টর : রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার অবশিষ্টাংশ নিয়ে ৭ নং সেক্টর গঠিত হয়েছিল। এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন প্রথমে মেজর নাজমুল হক এবং পরে সুবেদার মেজর এ. রব ও মেজর কাজী নূরুজ্জামান। এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর সদস্য ছিল দুই হাজার পাঁচশত জন এবং গণবাহিনীর সদস্য ছিল বারাে হাজার পাচশত জন। মালন, তপন, মেহেদীপুর, হামজাপুর, অঙ্গিনাবাদ, শেখপাড়া, ঠোকরাবাড়ি এবং নালগােলা এই আটটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত। ছিল ৭ নং সেক্টর। এর সদর দপ্তর ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুঘাটে।।
প্রথমে এই সেক্টরের সীমানা ছিল কুষ্টিয়া, যশাের, খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা। মে মাসের শেষের দিকে সীমানা ছােট করে কুষ্টিয়া ও যশাের জেলা, খুলনা জেলা সদর, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ। পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এর কমান্ডার ছিলেন আগস্ট পর্যন্ত মেজর ওসমান চৌধুরী এবং আগস্ট ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর। এম. এ. মঞ্জুর। এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনী ছিল দুই হাজার এবং গণবাহিনী ছিল আট হাজার। এর সদর দপ্তর ছিল । বেনাপােলে। তবে সদর দপ্তরের এক বিরাট অংশ ভারতের কল্যাণী শহরে অবস্থিত ছিল। |
বৃহত্তর বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা, সাতক্ষীরা-দৌলতপুর সড়কসহ খুলনা জেলার সমগ্র । দক্ষিণাঞ্চল এবং ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে এই সেক্টরটি গঠিত হয়। এই সেক্টরে কমান্ডার হিসেবে প্রথমে দায়িত্ব পালন করেছেন মেজর এম. এ. জলিল এবং পরে মেজর জয়নাল আবেদীন। অতিরিক্ত কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন। করেছেন মেজর এম. এ. মঞ্জুর। এ সেক্টরটি টাকি, হিঙ্গলগঞ্জ ও শমসেরনগর এই তিনটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল বাগেরহাট জেলার হাসনাবাদ গ্রামে।
অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল
সেক্টরের নির্দিষ্ট কোনাে সীমানা ছিল না। অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল, চট্টগ্রাম, চালনা প্রভৃতি অঞ্চলে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতাে। ১০ নং সেক্টর অর্থাৎ নৌ কমান্ডাে বাহিনীর কোনাে কমান্ডাে ছিল না। যখন যে অঞ্চলে তারা অপারেশন চালাত তখন সেই অঞ্চলের কমান্ডাের নেতৃত্ব তারা গ্রহণ করতাে। এই বাহিনী গঠনের উদ্যোক্তা ছিলেন ফ্রান্সে প্রশিক্ষণরত পাকিস্তান নৌবাহিনীর আট জন বাঙালি নৌ কর্মকর্তা। এরা হলেন চীফ পেটি অফিসার গাজী মােহাম্মদ রহমত উল্লাহ, পেটি অফিসার সৈয়দ মােশাররফ হােসেন, পেটি অফিসার আমিন উল্লাহ শেখ, এম. ই-১ আহসান উল্লাহ, আর, ও-১ এ. ডব্লিউ. চৌধুরী, এম, ই-১ বদিউল আলম, ই. এন-১ এমআর মিয়া এবং স্টুয়ার্ড১ আবেদুর রহমান। ১০ নং সেক্টর নৌ বাহিনীর কোনাে সদর দপ্তর এবং কোনাে সাব সেক্টর ছিল না।